নবম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণ ও পরবর্তিতে বিচার চাওয়াই অভিযুক্তের হাতে উল্টো মারধরের শিকার হয়েছেন নির্যাতিতার বাবা। নির্যাতিতার বাবাকে একটি আবাসিক হোটেলে ডেকে নিয়ে মারধর করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মোস্তাফিজুর রহমান নাসির।
ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে ২১ মে মাদারীপুরের শিবচরে।
স্বজন ও নির্যাতিতা জানান, জবি ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রচারণায় নামেন মোস্তাফিজুর রহমান নাসির। নির্বাচনি প্রচারণায় নেমে দেড় মাস আগে ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে গেলে, নাসিরের সঙ্গে শিক্ষার্থীর পরিচয় হয়।
একপর্যায়ে নাসির মাদ্রাসাছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেন। গত ২১ মে সকালে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে নাসির তার এক বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ নির্যাতিতা ও তার পরিবারের।
পরে পরিবারের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে মাদ্রাসাছাত্রীকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থল থেকে অসুস্থ অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে, সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
সেই ঘটনার পর ধর্ষীতার পরিবার এলাকার মাদবরদের কাছে অভিযোগ দিয়ে কোনো বিচার পায়নি নির্যাতিতার পরিবার।
পরে বাধ্য হয়ে ভুক্তভোগী পরিবারকে আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন অভিযুক্ত নাসির। সমাধানের কথা বলে নির্যাতিতার বাবাকে শনিবার সকালে মাদারীপুর শহরের একটি আবাসিক হোটেলে ডেকে নিয়ে মারধর করেন তিনি। স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশকে খবর দিলে, পুলিশ এসে নাসিরকে আটক করে। পরে তাকে থানায় নিয়ে যায়।
নির্যাতিতা ওই শিক্ষার্থীর পরিবার অভিযোগ করে বলেন, নাসিরের কঠিন বিচার চাই। ওর বিচার না হলে সমাজে মুখ দেখাতে পারব না।
মেয়েটির বাবা জানান, নাসির জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ও মাদারীপুর ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক। সেজন্য এলাকায় তার খুব প্রভাব। মাদবরদের কাছে বিচার চেয়েও পাইনি। উল্টো নাসিরের হাতে মার খেতে হয়েছে।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিরাজ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় মেয়েটির পরিবার এখনো থানায় আসেনি। ইতোমধ্যে সদর ওসি অভিযুক্ত নাসিরকে আটকের কথা মোবাইলে জানিয়েছেন। নাসিরকে থানায় নিয়ে আসতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নির্যাতিতার পরিবার অভিযোগ দিলে মামলা হবে।